Monday, May 26, 2014

৯টি প্যারোডি কবিতা

১)
পাঞ্জেরি,আর কতো দেরি??
কবে ঝগড়া থামাবে টম এন্ড জেরি?
কবে শেষ হবে ডরেমনের জয়ভেরি??
বাংলা গান ছেড়ে ওরা গায় “তেরি মেরি”
জাতীর ভাগ্যে কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
এই জন্যই কি বাংলায় গ্রন্থ রচিয়াছিলেন উইলিয়াম কেরি?
বলো পাঞ্জেরি!
ওরা হিন্দিতে কি পায়, এ এক বিশাল mystery!
তাই আমি চিন্তিত very very!
২)
কেউ কথা রাখে নি।
একচল্লিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি।
ছোটবেলায় কোনো এক জননেত্রী জনসভায় তার পরচর্চা হঠাত থামিয়ে বলেছিলো,
এদেশে আর লোডশেডিং থাকবে না।
তারপর মোমবাতি জালিয়ে কতো রজনী চলে গেলো,
কিন্তু সেই জননেত্রী আর এ মুখো হলেন না।
তিন বছর অপেক্ষায় আছি।
পদ্মা নদীর মাঝি “নৌকা”য় চড়ে বলেছিলো,
বড় হও দাদা থাকুর,
তোমাকে আমি পদ্মা সেতু দেখাবো।
সেই সেতুর উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করে।
“নৌকা”র মাঝি, আমি আর কতো বড় হবো?
আমার মাথা এ ঘরের ছাদ ফুড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায় পদ্মা সেতু দেখাবে?
একটাও নিজের জিনিস কাছে রাখতে পারিনি কখনো।
বন্দুক-চাপাতি দেখিয়ে কেড়েছে রাজনীতিবাড়ির ছেলেরা।
ভিখারীর মতন মন্ত্রনালয় এর সামনে দাড়িয়ে দেখেছি ভেতরের দুর্নীতি উতসব।
ঘুষ খেয়ে ফুলে ওঠা মন্ত্রীরা কতোরকম আমোদে হেসেছে।
আমাদের দিকে তারা ফিরেও চায়নি।
বাবা আমার কাধ ছুঁয়ে বলেছিলেন,
দেখিস, একদিন, আমরাও…
বাবা এখন অন্ধ, আমাদের দেখা হয়নি কিছুই।
সেই সুখ, সেই সম্পদ আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবে না।
এর আগে ভোটের সময় হাতে ধানের শীষ রেখে এক নেত্রী বলেছিলেন,
যদি আমায় ভোট দাও,
তবে তোমার ঘরেও এমন বস্তা বস্তা ধান মজুদ হবে।
ধানের জন্য আমি ভোট দিয়েছি,
বিবেকের চোখে বেধেছি কালো কাপড়,
সব ভোটের প্রতীক তন্ন তন্ন করে খুঁজে তাহাদের দিয়েছি সীল,
তবু কথা রাখেনি সেই নেত্রী,
তার হাতে শুধুই টাকার গন্ধ।
সে যে ক্ষমতার অধিকারিনী।
কেউ কথা রাখে নি,
একচল্লিশ বছর কাটলো,
কেউ কথা রাখে না।
৩)
আমি বলছি না পরীক্ষায় সাহায্য করতেই হবে,
আমি শুধু চাই কেউ একজন আমার দূরাবস্থা বুঝুক।
তার খাতা দেখে লেখার সুযোগ করে দেবার জন্য,
নিজে নিজে উঁকি দিতে গিয়ে আমি ক্লান্ত।
আমি বলছি না পরীক্ষায় সাহায্য করতেই হবে।
আমি চাই কেউ আমাকে উত্তর সম্পর্কে টিপস দিক।
আমি খাতা নিয়ে কাউকে আমার পাশে বসে থাকতে বলছি না,
আমি জানি, এই গার্লফ্রেন্ডের যুগ বন্ধুকে মুক্তি দিয়েছে বন্ধুসেবার দায় থেকে।
আমি চাই কেউ একজন জিজ্ঞেস করুক,
আমার কলম লাগবে কিনা, স্কেল লাগবে কিনা,
পেনসিল কম্পাসের সাথে একটা ব্যবহার যোগ্য ইরেজার লাগবে কিনা।
মারজিন দিতে, নাম রোল লিখতে আমি নিজেই পারি।
আমি বলছি না পরীক্ষায় সাহায্য করতেই হবে,
কেউ একজন আমার দৃষ্টিসীমার মাঝে তার খাতাটা রাখুক।
কেউ আমাকে লিখতে বলুক।
পৃষ্ঠা আদান প্রদানের সঙ্গী না হোক,
কেউ অন্তত আমাকে জিজ্ঞেস করুক,”দোস্ত, কিছু পারতেছিস তো?
৪)
সুরঞ্জনা,
ঐ প্রোফাইলে যেয়ো নাকো তুমি,
বন্ধুত্ব করো না ঐ যুবকের সাথে,
ফিরে এসো সুরঞ্জনা
টাইমলাইনের জঞ্জালহীন আমার এই প্রোফাইলটাতে…
৫)
হাজার বছর ধরে আমি করিতেছি ক্লাস এই ক্যাম্পাসে,
ক্লান্তিকর ল্যাব থেকে তিনতলার ঐ ক্লাসরুমে,
অনেক পড়েছি আমি, ফেসবুকহীন এই ধূসর জগতে,
সেখানে ছিলাম আমি, আরো দূর অন্ধকারে পরীক্ষা কক্ষে।
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারদিকে জীবনের বিচিত্র view!
আমারে দু দন্ড শান্তি দিয়েছিলো ক্যান্টিনের মাউন্টেন ডিউ!!!
৬)
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই- ছোট এ মাথা!
অনেক পড়া সেথা হয়েছে গাঁথা!
মোর মস্তিষ্ক ঘিরে,
পরীক্ষার ভূত ঘুরে ফিরে,
শেষে অসুস্থ হইয়ারহিনু পড়ি-
তাহলে এখন আমি কি করি??
দেশ ও জাতি, আই অ্যাম সো সরি,
তীরে এসে মোর ডুবিলো তরী!!
৭)
ও মেধাবী তাই ওর খাতায় চেয়ে থাকি স্যার,
সেকি মোর অপরাধ?
গুণীর কদর করিতে যে
আমার হয়েছে সাধ!
৮)
বহুদিন ধরে, বই খাতা ছুড়ে,
বহু ব্যয় করি, ফেস বুকে ঘুরে,
দেখিতে গিয়াছি কত শত মানুষ,
সেথায় করিয়াছি বসবাস!
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া,
বিছানা হইতে শুধু দুই পা ফেলিয়া,
একটি পড়ার টেবিলের উপরে
একটি সিলেবাস!
৯)
মহা ফাকিবাজ পড়া-ক্লান্ত!
আমি সেই দিন হব শান্ত!
যবে শিক্ষকের হুঙ্কার রোল ক্লাসরুমেতে ধ্বনিবে না,
শিক্ষকের খড়গ কলম পরীক্ষায় নাম্বার কাটিবে না,
ফাকিবাজ পড়া-ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত!

2 comments: