সম্প্রতি লন্ডন-ভিত্তিক সংস্থা ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশি পাওয়ার অ্যান্ড ইন্সপিরেশন’ প্রকাশ করেছে দেশের সেরা দশজন প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকা, যারা ব্রিটেনের পাশাপাশি সারাবিশ্বেই কমবেশি বিপ্লবী ভূমিকা রেখেছেন। লন্ডনের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কমনওয়েলথ রুমে এই সেরা দশ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।
সেরা দশের এই তালিকার মধ্যে তিনজনই এমন ব্যক্তিত্ব যাদের বিপ্লবী অবদান রয়েছে প্রযুক্তিকে ঘিরে। কেবল প্রযুক্তিতে অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের তালিকা তৈরি করলে তিনজনের মধ্যে থাকবেন যথাক্রমে জাওয়েদ করিম, সালমান খান ও সুমাইয়া কাজী। চলুন এক নজরে দেখা নেয়া যাক প্রযুক্তিতে এই তিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সফল তিন উদ্যোক্তাদের কী অবদান রয়েছে।
১। জাওয়েদ করিম – ইউটিউবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা
ইউটিউবের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও একবার না একবার হলেও সবাই ইউটিউবে প্রবেশ করেছেন। বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি ও মুভি/মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিজের অফিসিয়াল চ্যানেল থাকলেও শুরুতে কিন্তু মোটেই তেমনটা ছিল না। ব্যক্তিগত বা হোম ভিডিও আপলোডের স্থান হিসেবেই যাত্রা শুরু করে ইউটিউব। আর এই যাত্রা শুরু হয় যেই তিনজনের হাত ধরে তাদের মধ্যে একজন এই জাওয়েদ করিম। আর তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। সেরা ১০ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় তিনি দ্বিতীয় স্থান দখল করে রেখেছেন।
জাওয়েদ করিমের জন্ম তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে ২৮শে অক্টোবর ১৯৭৯ সালে। তাঁর বাবা, নাইমুল করিম 3M কোম্পানিতে কর্মরত একজন বাংলাদেশী গবেষক। তার মা, ক্রিস্টিন করিম, ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটাতে প্রাণ-রসায়নের একটি গবেষণা সহকারী অধ্যাপক। করিম জার্মানিতে বড় হয়েছেন। কিন্তু তাঁর পরিবার ১৯৯২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়।
করিম সেন্ট্রাল হাই স্কুল থেকে পাস করেন (সেইন্ট পল, মিনেসোটা), এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আর্বানা শ্যাম্পেইনে ভর্তি হন। সেখান হতে তিনি ২০০৪ সালে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। জাওয়েদ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখানে পড়া অবস্থায় করিম PayPal এ চাকুরি শুরু করেন।
PayPal-এ চাকুরি করার সময় তার সাথে পরিচয় হয় Chad Hurley ও Steve Chen এর সাথে। এই তিনজন পরে একটি ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট চালু করেন। গুগোল যখন ঐ ওয়েবসাইটটি কিনে নেয় তখন জাওয়েদ করিমকে ৬৪ মিলিয়ন ডলারের ১,৩৭,৩৩৪ টি শেয়ার দেওয়া হয়। করিম পরবর্তিতে এই টাকা বিভিন্ন ভার্সিটির ছাএদের বিভিন্ন বিজনেস আইডিয়া লন্চ ও ডেভলপ করতে ব্যবহার করেন। আপনার কাছে কোন ইউনিক কোন বিজনেস আইডিয়া থাকলে তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমারদের এই জাওয়েদ করিমই জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবের (YouTube) সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৫ সালের ২৩শে এপ্রিল “Me at the zoo” নামের ভিডিওটি আপলোড করে করিম অফিসিয়ালি ইউটিউব আমাদের জন্য উন্মুক্ত করেন।
২। সালমান খান – খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা
খান একাডেমি মূলত একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট। ২০০৬-এ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খান এই শিক্ষামূলক সাইটটি প্রতিষ্টা করেন। তিনি এমআইটি ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছিলেন।
খান একাডেমি সাইটটিতে রয়েছে পড়াশোনার জন্য হাজার হাজার রিসোর্স। রয়েছে ১ লাখেরও বেশি অনুশীলনী, ৪ হাজারেরও বেশি মাইক্রো-লেকচার যেগুলো ভিডিও আকারে ইউটিউবে সংরক্ষিত রয়েছে। সাইটটিতে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাস, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, মেডিসিন, অর্থনীতি, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, সৃষ্টিতত্ব, জৈব রসায়ন, আর্ট হিস্ট্রি, কম্পিউটার বিজ্ঞানসহ প্রচুর বিষয়ে পড়াশোনার জন্য রিসোর্স রয়েছে।
এই সব পাঠই বিশ্বব্যাপী যে কোনো শিক্ষার্থীর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সহজলভ্য। উইকিপিডিয়ায় প্রাপ্ত তথ্যমতে, খান একাডেমি প্রতি মাসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ৩০ কোটিরও বেশি পাঠ প্রায় ১ কোটি শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছে।অসাধারণ সব পরিকল্পনা জনসমক্ষে আনার জন্য গুগল ঘোষণা করে ‘প্রজেক্ট টেন টু দ্য হানড্রেড’ নামে ১০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার। প্রতিষ্ঠানটির দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৮ সালে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এতে বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ থেকে জমা পড়ে এক লাখ চুয়ান্ন হাজার আবেদন। দুই বছরের যাচাই-বাছাই শেষে প্রথমে ১৬টি পরিকল্পনা নির্বাচন ও তার তালিকা তৈরি করে গুগল। পরে চূড়ান্তভাবে বেছে নেওয়া হয় পাঁচটিকে। নির্বাচিত প্রকল্পগুলোকে আরও বিস্তৃত করার জন্য দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থসহায়তা। শিক্ষা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে সালমানের ‘খান একাডেমি’র বিনামূল্যে শিক্ষামূলক অনলাইন ভিডিও টিউটরিয়াল। একাডেমিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০ লাখ ডলার পুরস্কার দিয়েছে গুগল। ২০১২ সালের জুনে ৮ জুন অনুষ্ঠিত ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ১৪৬ তম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সালমান। ৩৫ বছর বয়সী সালমান খানই এমআইটির ইতিহাসে কনিষ্ঠতম সমাবর্তন বক্তা। ২০১২ সালের মে মাসে রাইস ইউনিভার্সিটিতেও সমাবর্তন বক্তা ছিলেন সালমান। ২০১০ সালে সালমান মাইক্রোসফট টেক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
সারাবিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলা এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা ও শিক্ষক সালমান খান যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ভারতের কলকাতায় এবং বাবা বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। লুইজিয়ানার পাবলিক স্কুল থেকে পাশ করে পরবর্তীতে তিনি ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে পড়াশোনা করেন।
সালমান খান বিশ্বের সেরা ১০ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় রয়েছেন চতুর্থ স্থানে।
৩। সুমাইয়া কাজী – সোশাল নেটওয়ার্ক সুমাজি’র প্রতিষ্ঠাতা
সুমাজি মূলত একটি ইন্টেলিজেন্ট সোশাল নেভিগেশন সিস্টেম যেটি ব্যক্তিগত ও পেশাদার নেটওয়ার্কের জন্য কাজে লাগানো হয়। এর প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর সোশাল মিডিয়ার কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে নতুন নতুন কানেকশন সুপারিশ করতে সক্ষম। মূলত এ কাজে এটি ফেসবুক ও প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক লিংকডইন-এর উপর বাড়তি ‘লেয়ার’ হিসেবে কাজ করে থাকে। ব্যবহারকারীর নেটওয়ার্ক ও তার কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সুযোগগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় এবং নতুন নতুন ব্যবহারকারীকে সুপারিশ করে থাকে।
সুমাইয়া কাজী এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তির নির্মাতা ও সুমাজি নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা। এটি মূলত স্যান ফ্র্যান্সিসকো ভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ যেটি ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছে। সুমাইয়া কাজী ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউডে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে ২০০৪-এ ডিগ্রি অর্জন করে তিনি সান মাইক্রোসিস্টেমস-এ কাজ করতে শুরু করেন। সেখানে কাজ করার সময়ই তিনি তার প্রথম কোম্পানি ‘দি কালচারকানেক্ট’ প্রতিষ্টা করেন যেটি তরুণ পেশাদারদের জন্য একটি মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে ২০১১-এর এপ্রিলে তিনি সুমাজি প্রতিষ্ঠা করেন। স্টার্ট-আপদের নিয়ে সেরা প্রকাশনা টেকক্রাঞ্চ-এর ‘টেকক্রাঞ্চ ডিজরাপ্ট স্টার্ট-আপ ব্যাটলফিল্ড’-এ সুমাজি ফাইনালিস্ট পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয়। সেখানে এটি Ommidzar Network অ্যাওয়ার্ড পায় যার বিভাগ ভিল “স্টার্ট আপ মোস্ট লাইকলি টু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড”। প্রকাশিত সেরা দশ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় নবম অবস্থানে রয়েছেন সুমাজির প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা সুমাইয়া কাজী
সেরা দশের এই তালিকার মধ্যে তিনজনই এমন ব্যক্তিত্ব যাদের বিপ্লবী অবদান রয়েছে প্রযুক্তিকে ঘিরে। কেবল প্রযুক্তিতে অবদান রাখা ব্যক্তিত্বদের তালিকা তৈরি করলে তিনজনের মধ্যে থাকবেন যথাক্রমে জাওয়েদ করিম, সালমান খান ও সুমাইয়া কাজী। চলুন এক নজরে দেখা নেয়া যাক প্রযুক্তিতে এই তিন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সফল তিন উদ্যোক্তাদের কী অবদান রয়েছে।
১। জাওয়েদ করিম – ইউটিউবের সহ-প্রতিষ্ঠাতা
ইউটিউবের নাম শোনেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও একবার না একবার হলেও সবাই ইউটিউবে প্রবেশ করেছেন। বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি ও মুভি/মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিজের অফিসিয়াল চ্যানেল থাকলেও শুরুতে কিন্তু মোটেই তেমনটা ছিল না। ব্যক্তিগত বা হোম ভিডিও আপলোডের স্থান হিসেবেই যাত্রা শুরু করে ইউটিউব। আর এই যাত্রা শুরু হয় যেই তিনজনের হাত ধরে তাদের মধ্যে একজন এই জাওয়েদ করিম। আর তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। সেরা ১০ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় তিনি দ্বিতীয় স্থান দখল করে রেখেছেন।
জাওয়েদ করিমের জন্ম তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে ২৮শে অক্টোবর ১৯৭৯ সালে। তাঁর বাবা, নাইমুল করিম 3M কোম্পানিতে কর্মরত একজন বাংলাদেশী গবেষক। তার মা, ক্রিস্টিন করিম, ইউনিভার্সিটি অফ মিনেসোটাতে প্রাণ-রসায়নের একটি গবেষণা সহকারী অধ্যাপক। করিম জার্মানিতে বড় হয়েছেন। কিন্তু তাঁর পরিবার ১৯৯২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়।
করিম সেন্ট্রাল হাই স্কুল থেকে পাস করেন (সেইন্ট পল, মিনেসোটা), এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয় অ্যাট আর্বানা শ্যাম্পেইনে ভর্তি হন। সেখান হতে তিনি ২০০৪ সালে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। জাওয়েদ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখানে পড়া অবস্থায় করিম PayPal এ চাকুরি শুরু করেন।
PayPal-এ চাকুরি করার সময় তার সাথে পরিচয় হয় Chad Hurley ও Steve Chen এর সাথে। এই তিনজন পরে একটি ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট চালু করেন। গুগোল যখন ঐ ওয়েবসাইটটি কিনে নেয় তখন জাওয়েদ করিমকে ৬৪ মিলিয়ন ডলারের ১,৩৭,৩৩৪ টি শেয়ার দেওয়া হয়। করিম পরবর্তিতে এই টাকা বিভিন্ন ভার্সিটির ছাএদের বিভিন্ন বিজনেস আইডিয়া লন্চ ও ডেভলপ করতে ব্যবহার করেন। আপনার কাছে কোন ইউনিক কোন বিজনেস আইডিয়া থাকলে তাঁর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
আমারদের এই জাওয়েদ করিমই জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইউটিউবের (YouTube) সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৫ সালের ২৩শে এপ্রিল “Me at the zoo” নামের ভিডিওটি আপলোড করে করিম অফিসিয়ালি ইউটিউব আমাদের জন্য উন্মুক্ত করেন।
২। সালমান খান – খান একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা
খান একাডেমি মূলত একটি অলাভজনক শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট। ২০০৬-এ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান খান এই শিক্ষামূলক সাইটটি প্রতিষ্টা করেন। তিনি এমআইটি ও হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেছিলেন।
খান একাডেমি সাইটটিতে রয়েছে পড়াশোনার জন্য হাজার হাজার রিসোর্স। রয়েছে ১ লাখেরও বেশি অনুশীলনী, ৪ হাজারেরও বেশি মাইক্রো-লেকচার যেগুলো ভিডিও আকারে ইউটিউবে সংরক্ষিত রয়েছে। সাইটটিতে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, ইতিহাস, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান, মেডিসিন, অর্থনীতি, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, সৃষ্টিতত্ব, জৈব রসায়ন, আর্ট হিস্ট্রি, কম্পিউটার বিজ্ঞানসহ প্রচুর বিষয়ে পড়াশোনার জন্য রিসোর্স রয়েছে।
এই সব পাঠই বিশ্বব্যাপী যে কোনো শিক্ষার্থীর জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সহজলভ্য। উইকিপিডিয়ায় প্রাপ্ত তথ্যমতে, খান একাডেমি প্রতি মাসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ৩০ কোটিরও বেশি পাঠ প্রায় ১ কোটি শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দিতে পেরেছে।অসাধারণ সব পরিকল্পনা জনসমক্ষে আনার জন্য গুগল ঘোষণা করে ‘প্রজেক্ট টেন টু দ্য হানড্রেড’ নামে ১০ মিলিয়ন ডলারের পুরস্কার। প্রতিষ্ঠানটির দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২০০৮ সালে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এতে বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ থেকে জমা পড়ে এক লাখ চুয়ান্ন হাজার আবেদন। দুই বছরের যাচাই-বাছাই শেষে প্রথমে ১৬টি পরিকল্পনা নির্বাচন ও তার তালিকা তৈরি করে গুগল। পরে চূড়ান্তভাবে বেছে নেওয়া হয় পাঁচটিকে। নির্বাচিত প্রকল্পগুলোকে আরও বিস্তৃত করার জন্য দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অঙ্কের অর্থসহায়তা। শিক্ষা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছে সালমানের ‘খান একাডেমি’র বিনামূল্যে শিক্ষামূলক অনলাইন ভিডিও টিউটরিয়াল। একাডেমিটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ২০ লাখ ডলার পুরস্কার দিয়েছে গুগল। ২০১২ সালের জুনে ৮ জুন অনুষ্ঠিত ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ১৪৬ তম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন সালমান। ৩৫ বছর বয়সী সালমান খানই এমআইটির ইতিহাসে কনিষ্ঠতম সমাবর্তন বক্তা। ২০১২ সালের মে মাসে রাইস ইউনিভার্সিটিতেও সমাবর্তন বক্তা ছিলেন সালমান। ২০১০ সালে সালমান মাইক্রোসফট টেক অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
সারাবিশ্বে ব্যাপক সাড়া ফেলা এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা ও শিক্ষক সালমান খান যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মা ভারতের কলকাতায় এবং বাবা বাংলাদেশের বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। লুইজিয়ানার পাবলিক স্কুল থেকে পাশ করে পরবর্তীতে তিনি ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে পড়াশোনা করেন।
সালমান খান বিশ্বের সেরা ১০ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় রয়েছেন চতুর্থ স্থানে।
৩। সুমাইয়া কাজী – সোশাল নেটওয়ার্ক সুমাজি’র প্রতিষ্ঠাতা
সুমাজি মূলত একটি ইন্টেলিজেন্ট সোশাল নেভিগেশন সিস্টেম যেটি ব্যক্তিগত ও পেশাদার নেটওয়ার্কের জন্য কাজে লাগানো হয়। এর প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর সোশাল মিডিয়ার কর্মকাণ্ডের উপর ভিত্তি করে নতুন নতুন কানেকশন সুপারিশ করতে সক্ষম। মূলত এ কাজে এটি ফেসবুক ও প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক লিংকডইন-এর উপর বাড়তি ‘লেয়ার’ হিসেবে কাজ করে থাকে। ব্যবহারকারীর নেটওয়ার্ক ও তার কর্মকাণ্ড বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন সুযোগগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় এবং নতুন নতুন ব্যবহারকারীকে সুপারিশ করে থাকে।
সুমাইয়া কাজী এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তির নির্মাতা ও সুমাজি নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা। এটি মূলত স্যান ফ্র্যান্সিসকো ভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ যেটি ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি অ্যাওয়ার্ড জিতে নিয়েছে। সুমাইয়া কাজী ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউডে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে ২০০৪-এ ডিগ্রি অর্জন করে তিনি সান মাইক্রোসিস্টেমস-এ কাজ করতে শুরু করেন। সেখানে কাজ করার সময়ই তিনি তার প্রথম কোম্পানি ‘দি কালচারকানেক্ট’ প্রতিষ্টা করেন যেটি তরুণ পেশাদারদের জন্য একটি মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে কাজ করে। পরবর্তীতে ২০১১-এর এপ্রিলে তিনি সুমাজি প্রতিষ্ঠা করেন। স্টার্ট-আপদের নিয়ে সেরা প্রকাশনা টেকক্রাঞ্চ-এর ‘টেকক্রাঞ্চ ডিজরাপ্ট স্টার্ট-আপ ব্যাটলফিল্ড’-এ সুমাজি ফাইনালিস্ট পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয়। সেখানে এটি Ommidzar Network অ্যাওয়ার্ড পায় যার বিভাগ ভিল “স্টার্ট আপ মোস্ট লাইকলি টু চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড”। প্রকাশিত সেরা দশ প্রভাবশালী বাংলাদেশির তালিকায় নবম অবস্থানে রয়েছেন সুমাজির প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা সুমাইয়া কাজী
No comments:
Post a Comment