Thursday, May 29, 2014

চালকের নিরাপত্তা ডিভাইস তৈরিতে সফল বাংলাদেশী গবেষক

চালকের নিরাপত্তা ডিভাইস তৈরি করে সারা বিশ্বে চমক দেখালো বাংলাদেশিরা। যখন অ্যাপল ও বিএমডব্লিউ-এর মতো বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০০টি কোম্পানি গাড়ি চালকের নিরাপত্তার উপায় নিয়ে ভাবছে, তখন সেটাই আবিষ্কার করে দেখালেন বাংলাদেশের তরুণেরা। 

ইতোমধ্যে এসব তরুণ গবেষক গাড়ি চালকের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণকারী একটি নিরাপত্তা গ্যাজেট বা ডিভাইস তৈরি করেছেন।

তারা ডিভাইসটির নাম দিয়েছেন ‘ড্রাইভার ডিস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। এ কাজে নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এমডি. আব্দুর রাজ্জাক। 

ডিভাইসটি মূলত সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে তৈরি করা হয়েছে। আধুনিক আইটি অবকাঠামোর বিভিন্ন যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এটি ব্যবহার করা যাবে।

ড. আব্দুর রাজ্জাকের সার্বিক নির্দেশনায় কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী অমিত, তমাল, সাকিব ও নুসরাত রাত দিন পরিশ্রম করে এই ডিভাইস সিস্টেমটি তৈরি করেছেন।

ডিভাইসটি যেসব কাজ করবে : 

এটি চলন্ত অবস্থায় মোবাইল ফোনে কথা বলা, মাদক ও এলকোহল সেবন, নেশা, তন্দ্রা-ঘুম, হার্টবিটের ওঠানামার গড়, রক্তচাপ ও তাপমাত্রা থেকে শুরু করে গাড়ির চালকের সার্বিক শারীরিক ও মানসিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। 

চালককে অমনোযোগী ও বিপর্যস্ত দেখানোর সাথে সাথে, ডিভাইসটি চালককে তার গাড়ি চালনায় নিয়ম মতো মনোযোগী হওয়ার জন্য সতর্ক করতে বিশেষ শব্দ করবে।

এমনকি ডিভাইস সিস্টেমটিতে একটি জরুরি এসওএস বাটন রয়েছে। এর সুবিধা হল, হঠাৎ করে যদি কোনো দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে চালক ওই বাটনটি চেপে সতর্ক করতে পারেন।
এ অব্স্থায় ডিভাইসটি গাড়ির মালিকের মোবাইল ফোনেও একটি অটো নোটিস দেবে। তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীদের প্রাণ বাঁচাতে এই নোটিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া সময় অনুয়ায়ী ওই গাড়ি ও চালকের সকল তথ্য ডিভাইসটির একটি অস্বচ্ছ ডাটাবেইজে সংরক্ষিত থাকবে। গাড়ির মালিক কম্পিউটার বা মোবাইলের মাধ্যমে এই ডাটা খুলে দেখতে পারবেন এবং দিনের যেকোনো সময় যেকোনো জায়গায় গাড়ি ও এর চালকের পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন।

ডিভাইসটির তৈরি সম্পর্কে ড. রাজ্জাক বলেন, "যে ডিভাইস সিস্টেমটি আমরা গড়ে তুলেছি, সেটি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার এবং গাড়ির ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে রাখতে সাহায্য করবে। এছাড়া মালিক ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী তাৎক্ষণিক গাড়ি ও চালকের অবস্থাও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখত পারবে।"

স্বীকৃতি : 

ইতোমধ্যে দেশে এবং বিদেশে ডিভাইসটি আবিষ্কারের পর ড. রাজ্জাক এবং তার টিমটি ব্যাপক স্বীকৃতি পেয়েছে।
অবশ্যই ডিভাইসটি তৈরিতে অস্ট্রেলিয়ার ইনফরমেশন সোসাইটি ইনোভেশন ফান্ড থেকে ৩০ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার পেয়েছেন গবেষক দল। 

সংস্থাটির ২০৯টি প্রজেক্টের মধ্যে ড. রাজ্জাকের নেতৃত্বাধীন টিমটি ১১তম অবস্থানে মনোনীত হন।

দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের একাডেমিশিয়ান, পরিবহন মালিক, সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে ড. রাজ্জাক তার এই আবিষ্কারটির পরিচয় তুলে ধরেছেন।

ডিভাইসটির দাম ধরা হয়েছে ২৫ হাজার। ইতোমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ডিভাইসটি সোহাগ পরিবহনের গাড়িতে যুক্ত করা হয়েছে। 

No comments:

Post a Comment