Wednesday, October 30, 2013

রাজা চন্দ্র ..............................মোঃ নুরুন্নাবী

অনেক অনেক আগে সূর্য রাজ্য নামে একটা রাজ্য ছিল । রাজার নাম ছিল সূর্য নারায়ণ । রাজার ১৫ বছর পরে প্রথম সন্তান জন্মগ্রহন করে তার নাম রাখে চন্দ্র সেই সঙ্গে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে রাখেন চন্দ্র রাজ্য । চন্দ্রের বয়েস যখন ১৬ বছর তখন রাজা মারা যায় জার ফলে রাজ্যের নতুন রাজা হয় চন্দ্র । রাজা হবার কয়েক দিনের মধ্যে তার চাচা তাকে হত্যা করে রাজা হবার চেষ্টা করে কিন্তু সেনাপতির বিশ্বস্ততার কারনে সেটি ঘটে নি । রাজা চন্দ্র তলোয়ার চালনায় ছিলেন তৎকালীন সময়ে তার মত যোদ্ধা ছিল না । রাজা চন্দ্র প্রথম ২১ বছর বয়েসে মিজরাম রাজ্য জয় করেন একরকম বিনা বাধায় তার কৌশল ও বুদ্ধি মত্তার কারনে । সেই রাজ্যের রাজকন্যাকে বিয়ে করেন রাজা চন্দ্র । এই রাজ্য জয়ের মাধ্যমে তার রাজ্য জয়ের শুভ সূচনা ঘটে । এরপর তিনি ১০ টি রাজ্য জয় করেন সাথে সেই রাজ্যের রাজ কন্যাকে বিয়ে করেন । নতুন রাজকন্যা বিয়ে করার সাথে সাথে আগের রানীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান । কয়েক দিনের মধ্যে তিনি নতুন ও সমৃদ্ধ রাজ্য কাশ্মীর আক্রমণ করেন । এখানেও তিনি জয়ই হন । তার রীতি অনুযায়ী কাশ্মীরের রাজকন্যা কে বিয়ে করতে চান কিন্তু কাশ্মীরের রাজকন্যা সুলতানা রাজিয়া এতে অমত করেন কারন তিনি একজন মুসলিম কিন্তু রাজা হিন্দু । কিন্তু রাজা চন্দ্র সুলতানা রাজিয়ার রূপ দেখে তিনি এত মুগ্ধ হয়েছেন যে তিনি যে কোন মুললে তাকে বিয়ে করবেন। এক প্রকার জোর করেই তিনি রাজিয়াকে বিয়ে করেন । তাকে তার রাজপ্রাসাদে নিয়ে আসেন ও আগের স্ত্রীকে ত্যাগ করেন । রাজা চন্দ্র এবার নিজের রাজ্যের উন্নয়ন ও প্রজাদের দিকে মন যোগী হলেন কারন এতদিন তিনি সুধু রাজ্য জয়ের জন্য চেষ্টা করেছেন নিজের রাজ্যের দিকে তাকানোর সময় পাননি । সুলতানা রাজিয়া মুসলিম হওয়ায় সে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরতেন কিন্তু রাজা চন্দ্র তাকে কখন এসব কাজ করতে বাধা দেননি আবার নিজের ধর্ম থেকে সরে আসেন নি । সুলতানা রাজিয়া স্বামীর যত স্বাদ মেটানর চেষ্টা করতেন কখনও স্বামীর অবাধ্য হতেন না । যেহেতু রাজা চন্দ্র অনেকদিন রাজ্যের দিকে নজর রাখেন নি তাই তার কর্মচারী গণ তার মত বিভিন্ন রাজ্য থেকে সুন্দরী মেয়ে জোর করে ধরে এনে বিয়ে করত ও ইচ্ছা মত ফেলে দিত । সুলতানা রাজিয়া এটা জানার রাজা চন্দ্রকে বলেন । রাজা চন্দ্র সবার শাস্তির ব্যবস্থা করেন ও এটা বন্ধ করেন ।

প্রায় বছর খানেক পরে রাজা চন্দ্র গুরাত রাজ্য জয়ের জন্য বের হন কিন্তু সুলতানা রাজিয়া তার সাথে যেতে চান এবং বলেন ,"আমি আপনার সঙ্গে যেতে চাই, জাহাপানা ।"
রাজা বললেন ,"বেগম , আপনি জানেন যুদ্ধের সময় আমি কখন নারী সঙ্গে নেই না এটা আমাকে অন্যমনস্ক করে দেয় । আবার যুদ্ধের সময় আমার অনেক কিছুই হতে পারে তখন আপনাকে কে দেকবে । আমি আপনাকে কোন বিপদে ফেলতে পারবনা ।"
"জাহাপানা, যেদিন থেকে আমি আপনার স্ত্রী তখন থেকে আপনার ভাল মন্দ দেখার দায়িত্ব আমি নিয়েছি । আপনার সমস্যা হয় এমন কিছু আমি করবনা কিন্তু আমি আপনাকে ছেরে থাকতে পারবনা । আর আপনি সাথে থাকলে আমি যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত আছি ।"
"আচ্ছা ঠিক আছে ।"
রাজের সাথে রানী যুদ্ধের ময়দানে গেলেন এবং সেই রাজ্য জয় করলেন । রাজা চন্দ্রের অভ্যাস অনুযায়ী নতুন রাজ্যের রাজকন্যাকে বিয়ে করার চিন্তা করলেন কিন্তু সুলতানা রাজিয়া কে দেখার পর রাজকন্যাকে সাধারন একজন মেয়ের মত মনে হয় । রাজা চন্দ্র দ্বিধায় পরে গেলেন । সুলতানা রাজিয়া রাজাকে চিন্তিত দেখে বললেন ," আপনার চিন্তার কিছু নাই আমি আপনার বিয়েতে বাধা দিবনা । আপনি নিশ্চিন্তে রাজকন্যাকে বিয়ে করতে পারেন । চলুন ঘুমাতে যাই ।"
রাজা চন্দ্র সুলতানার সাথে কাফেলায় ফিরে গেলেন । সকালে উঠে রাজা চন্দ্র তার বাহিনী নিয়ে ফিরে আসলেন তার রাজ্যে । সাথে একটা সাজান কাফেলা । রাজ্যের সবাই এসেছে নতুন রানী দেখার জন্য । রানী বের হলেন কিন্তু নতুন নয় আগের রানী ।


চন্দ্র রাজ্যে এক জায়গায় বিদ্রোহের সংগঠনের একটা সম্ভাবনা দেখা দেয় রাজার গুপ্তচর এই সংবাদ নিয়ে আসে । রাজা চন্দ্র অত্যন্ত ক্ষিপ্ত হয়ে যান এবং সেই স্থানে যাওয়ার জন্য রওনা হন সাথে তার বেগম । রাজা চন্দ্র সেখানে গিয়ে তার দুর্গে আশ্রয় নেন । তিনি এতটা ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন যে তিনি সব বিদ্রোহদের হত্যার নির্দেশ দেন কিন্তু রানী তাকে বিদ্রোহীদের সাথে সরাসরি কথা বলতে বলেন । তিনি  তাই সব বিদ্রোহীদের তার সামনে হাজির করতে বলেন । সবার সাথে কথা বলে তিনি জানতে পারেন এখানে ছয় মাস ফসল হয় না পানি না থাকার কারনে আর তাদের খাবার পানির খুব সমস্যা তাই তারা বিদ্রোহ করে নিজেরাই নিজেদের খাল খনন করবে । রাজা চন্দ্র খাল খননের নির্দেশ দেন । যার সেখানকার জমির পানির সমস্যা মিটে আর ১০০ কুপ খননের নির্দেশ দেন জাতে তাদের পানির সমস্যা মিটে যায় ।

রাজা চন্দ্র আরও বেশি রাজ্যের দিকে মনোনিবেশ করেন । রাজ্যের মানুষের সুখ দুঃখের খোঁজ খবর নেন । তার এসব পরিবর্তন এসেছে তার সন্তান আগমনের খবর শুনে । সুলতানা রাজিয়ার নিয়মিতি পরিচর্যা করছেন । সুলতানা রাজিয়ার সাথের বিয়ের প্রথম থেকে রাজা চন্দ্র কে মুসলিম হওয়ার কথা বলছেন । অবশেষে রাজা চন্দ্র রাজী হয়েছেন । রাজা চন্দ্র সুলতানা রাজিয়ার মাধ্যমে মুসলমান হন । সেই রাতে খবর আসে গুরাত রাজ্যের রাজ পরিবার বর্গ সৈন্য সংগ্রহ করে বিদ্রোহ করে রাজা চন্দ্রের সৈন্যদের বিতাড়িত করেছে । রাজা চন্দ্র সন্তান সম্ভাবা রানী রানী রেখে প্রথম বারের মত যুদ্ধে গেলেন । গুরাত রাজ্যের সৈন্যদের হটিয়ে আবার রাজ্য দখল করেন রাজা চন্দ্র । রাজা চন্দ্র যখন রাজপ্রাসাদে ফেরার সময় গুরাত রাজ্যের গুপ্তচর তাকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে । আর একই সময় রানী সুলতানা রাজিয়া একটি ছেলে সন্তান প্রসব করেন । যে ছেলের নাম রাখা হয় সুলেমান চন্দ্র । যে পিতার মত তলয়ার চালনায় দক্ষ হয়ছে এবং ১০ বছর বয়েসে সিংহাসনে প্রথমেই গুরত রাজ্য দখল করেন ।

উৎসর্গ ঃ
আমাদের একটা গ্রুপ আছে যার নাম আমরা বিশ যদিও এর সদস্য সংখ্যা ৬ জন । সেই গ্রুপের সকল সদস্যদের জন্য আমার এ গল্প ।

No comments:

Post a Comment