মতিঝিল ইত্তেফাক মোড়ের পাশে দোতলা বাসাটি শ্রুতিদের । শ্রুতির বাবা একজন সরকারী চাকরিজীবী । চাকরির সুবাদেই এই বাসাটি পেয়েছে শ্রুতির বাবা । শ্রুতিদের সংসারে লোক সংখ্যা ৩ জন কিন্তু দোতলা বাড়ীতে মোট রুম সংখ্যা ৬ টি । শ্রুতিরা থাকে নীচ তলায় । উপরের তলা ভারা দেয় তার বাবা । শুক্রবারে বাড়ীতে সদস্য সংখ্যা একজন বাড়ে সে হল শ্রুতির মামা । গ্রামের বাড়ীতে না গেলে শ্রুতিদের বাড়ীতে আসে । শ্রুতির সম বয়সী এক্তা ছেলে আসে শ্রুতির মামার গ্রামের ইস্কুলে পড়াশোনা করে নাম মিসুক ।
মিসুক ক্লাস ৫ পর্যন্ত গ্রামে পড়াশোনা করেছে । সে ছাত্র হিসেবে খুব ভাল । ক্লাস ৫ এ বৃত্তি পেয়েছে । মামা ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার পরিবার সহ ঢাকা চলে আসে উঠে শ্রুতিদের উপরের তলায় । শ্রুতি অ মিসুকের মধ্যে দারুণ ভাব সব সময় একসাথে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমনোর আগ পর্যন্ত । শ্রুতি অ মিসুক একই ইস্কুলে ভর্তি হয় তাদের পরীক্ষার ফলাফলে কেউ প্রথম কেউ দ্বিতীয় হয় । শ্রুতিদের বাসার সামনে একটু ছোট জায়গা আসে যেখানে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে । ফেব্রুয়ারি মাসে এ গাছটা ফুলে ফুলে ভরে উঠে দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে । শ্রুতির মা মুরগী পালে বাড়ীর খালি জায়গায় । শ্রুতির প্রতিদিনের অভ্যাস সকালে উঠেই মুরগী দিম পেরেছে কি না । মিসুক আসার পর মিশুকও ওর সাথে প্রতিযোগিতা করে সকালে উঠে দিম খোঁজার জন্য । একদিন মিসুক মুরগী ডিম পেরেছে কি না দেখতে গিয়ে পচা দুটো ডিম রেখে আসে । শ্রুতি যথারীতি ডিম নিয়ে এসে ডিম ভাজার জন্য ফাটিয়েছে তখনি ডিমের পচা গন্ধে ঘর আল হয়ে গেছে । শ্রুতি তখনি উপর তলায় গিয়ে মিসুকের পিথে ৮-১০ টা কিল বসিয়ে ফিরে আসে । ওদের এসব কাণ্ড দেখে মা বাবা মামা মামি সবাই হাসা হাসি করে । একদিন কি মনে করে যেন মিসুক নিচতলায় এসেছে ঠিক তখনি শ্রুতি গোসল করে নগ্ন অবস্থায় বাইরে এসেছে । মিশুককে দেখে শ্রুতি জোরে একটা চিৎকার দিয়ে ঘরে চলে গেছে আর মিশুকও লজ্জায় উপর তলায় চলে গেছে । এরপর প্রায় সপ্তা খানেক শ্রুতি অ মিসুকের কথা বলা বন্ধ এমনকি সামনাসামনি পরলেও লজ্জায় লাল হয়ে যায় দুজনি ।
শ্রুতি ও মিসুক দুজনি এস এস ছি পরীক্ষায় এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে । এস এস ছি পরীক্ষা পর্যন্ত তারা একই ইস্কুলে পড়েছে । এখন তাদের ভিন্ন কলেজে ভর্তি হয়েছে । মিসুক নটরডেম কলেজে আর শ্রুতি আইডিয়াল কলেজে । বাসার সবাই মিলে মাঝে মাঝে আড্ডা দেয় বাসার ছাদে । দুজনের এস এস ছি পরীক্ষার পর যে অবসর সময় ছিল বাসার প্রতিদিন না হলেও শ্রুতি অ মিসুক নিয়মিত আড্ডা দিত । এই সময়ে তাদের ভিতরকার যে বন্ধুত্ব সেটা ভালবাসার দিকে আগায় যদিও কেউ কাও কে কখনও বলেনি মুখে । শ্রুতির স্বভাবে যেমন পরিবর্তন এসেছে, পরিবর্তন এসেছে তার দেহে । মিশুকেরও তাই । শ্রুতি এখন দেখতে অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে তার চুল হয়েছে কোমর পর্যন্ত, চিকন তার শরীরের গড়ন, মুখের দিকে তাকালে চোখ ফেরানো যায় না । মিসুক আর আগের মত লিকলিকে দেহী নয়, তার সাস্থের উন্নতি হয়েছে ,আরও বেশি বুদ্ধিমান হয়েছে । তারা মাঝে মাঝে দুজনে একসাথে তারা দেখে তখন দুজন কাছে আসতে চায় কিন্তু পারে না ।
মিসুক ঘুমিয়ে আছে দোতলায় তার নিজের ঘরে । হঠাৎ শ্রুতি আসলো তার ঘরে , শ্রুতির একা ঘুম আসছিলো না । শ্রুতি মিসুকের পাসে শুয়ে পড়ল । মিসুক শ্রুতিকে জ্বরিয়ে ধরল , শ্রুতি কোন শব্দ করল না নিঃশব্দে মিশে গেল মিসুকের বুকের সাথে । তারপর দুজন দুজনকে সমর্পণ করলো একে অন্যকে । তারা যেন এখন এক আত্মা, এক দেহ । হঠাৎ চোখ মেলল সে ভাবল সে স্বপ্ন দেখেছে । মিসুক পাসে ফিরে তাকাল দেখল শ্রুতি তার পাসে শুয়ে আছে । মিসুক নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না এটা স্বপ্ন না সত্যি । সে নিজের গায়ে চিমটি কাটল সে বাথ্যাও পেল মানে স সত্যি । এরপর সে শ্রুতিকে ডাকল শ্রুতি ঘুম থেকে জেগে সেও অবাক হল । কিন্তু কিছু না বলে কাপড় ঠিক করে নিচে চলে গেল । এ ঘটনার পর শ্রুতি ও মিসুকের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও বেশি গভীর হল।
মিশুককে ছাদে নিয়ে এসেছে শ্রুতি এক্তা কথা বলার জন্য । কথাটা শ্রুতি বলতে গিয়ে কেন যেন বলতে পারছিলো না । অবশেষে বলল," সে সন্তান সম্ভাবা ।" কথাটা শোনার পর মিসুকের মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । মুহূর্তের মধ্যে তার মাথা খালি হয়ে গেল । সে দপাস করে ছাদের উপর বসে পড়ল । মিসুক ও শ্রুতি দুজনেই কেবল কলেজে উঠেছে ,এ সময় তার সন্তান শ্রুতির পেটে । এখন সে কি করবে ,সে তো মা বাবা ত দুরের কথা কাও কে বলতে পর্যন্ত পারবে না । মুসুক শ্রুতির দিকে তাকাল তার মুখটা কাল চোখের নিচে কালি পরে গেছে মনে হয় কয়েক দিন ঘুম হয় না শ্রুতির । মিসুক এখন কি করবে সে কি গোপনে শ্রুতিকে বিয়ে করবে আর যদি বিয়েও করে তাহলেও ত সমাধান হচ্ছেনা কারন সে এখন বাবা হতে পারবে না পারবে না শ্রুতি মা হতে করন তার কোন আয় রোজগার নাই ।সে বিয়ে করলে খাওয়াবে কি ? মিসুক ও শ্রুতির বাবা মার কেউ মেনে নিবে না । মিসুক আবার তাকায় শ্রুতির পেটের দিকে সে বুঝতে চায় শ্রুতি যে সন্তান সম্ভাবা সেটা বুঝা যায় না কিন্তু কয়েক দিন পরি তো বঝা যাবে । পাড়ার লোকে শ্রুতিকে নানা কথা বলবে এসব সহ্য করতে না পেরে হয়তো শ্রুতি গলায় দড়ি দিবে না হয় বিষ খাবে । না সে আর চিন্তা করতে পারছে না । মিসুক শ্রুতিকে চিন্তা করতে বাড়ন করে নিচে যেতে বলে । শ্রুতি চলে যায় কিন্তু হাজার মণের বোঝা যেন চাপিয়ে দিয়ে যায় ।
মিসুক ১০ হাজার টাকা যোগাড় করেছে । শ্রুতির পেটে তার অনাগত সন্তানের মৃত্যু নিস্তিত করতে । শ্রুতি ও মিসুক রিক্ত হস্তে বাড়ী ফিরল । মিসুক সেদিন সারা রাত কেঁদেছকে , কেঁদেছে শ্রুতিও । চোখের পাতা এক করতে পারেনি দুজনের কেউই ।
শ্রুতির জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসছে । মিসুক প্রতিদিনি তাই দেখছে তার কিছু করার নেই । মিসুক ও শ্রুতি আগের মত ছাদে আড্ডা দেয় না কথা বলে খুব কম। তারা যেন দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে । সেই দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিল শ্রুতির বিয়ে হয়ে । শ্রুতি তার বিয়েতে অমত করে নি কারন তার সাথে মিসুকের বিয়ে কোন ভাবেই সম্ভব নয় । সে এও জানে মিসুক ছাড়া অন্য কওকে সে পরিপূর্ণ ভাবে ভালবাসতে পারবে না । বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকে মিসুকের সাথে শ্রুতির কথাত দুরের কথা দেখা পর্যন্ত হয় নি । বিয়ের আগের দিন রাতে শ্রুতি ছাদে যায় সেখানেই দেখা হয় মিসুকের সাথে। সে মিসুকের কাঁধে, মিসুক ফিরে তাকায় । মিসুকের চোখ ফোলা এখন চোখের কোনায় জল আছে । শ্রুতি মিশুককে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে , কাঁদে মিশুকও । অনেক্ষন পর কান্না থামে শ্রুতি মিসুকের ঠোঁটে একটা চুম্বন একে চলে যায় ।
শ্রুতির সাথে বছর দশেকের উপর দেখা নেই । মিসুক চায় না শ্রুতির সাথে দেখা হোক । মিসুক শুনেছে শ্রুতির স্বামী খুব ভাল মানুষ যদিও শ্রুতির কোন সন্তান হয়নি তবুও স্বামী তাকে ত্যাগ করে নি বরং শ্রুতিকে এ কথা কখনও মনে করতে দেয় না । শ্রুতির স্বামী তাকে অনেক বার যেতে বলেছে বাড়ীতে কিন্তু সে কখনও জায় নি । মিসুক এখন প্রথম স্রেনির সরকারি কর্মকর্তা । তার বিয়ের বয়েস পার হয়ে গেছে অনেক আগেই মা বাবা বিয়ের কথা বলতে বলতে অবশেষে কিছু করতে না পেরে তারা চলে গেছে গ্রামের বাড়ীতে । মিসুকের অফিস বাদে অন্য সময় সে কমলাপুরের পথ শিশুদের শিক্ষা দান করে । সে তার বেতনের টাকা দিয়ে কাপড় চোপর কিনে দেয় তাদের । এদের মধ্যে একটা মেয়েকে তার খুব ভাল লাগে যার বয়স ৯ বছর । সে এই মেয়েকে দেখে আর ভাবে তার সন্তানটি হয়ত এর চেয়ে বড় হত । মিসুক এসব পথ শিশুদের মাঝে খুঁজে পায় তার সন্তানের ছায়া ।
উৎসর্গ ঃ
আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষিকা সপ্না ।
মিসুক ক্লাস ৫ পর্যন্ত গ্রামে পড়াশোনা করেছে । সে ছাত্র হিসেবে খুব ভাল । ক্লাস ৫ এ বৃত্তি পেয়েছে । মামা ছেলের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার পরিবার সহ ঢাকা চলে আসে উঠে শ্রুতিদের উপরের তলায় । শ্রুতি অ মিসুকের মধ্যে দারুণ ভাব সব সময় একসাথে খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে রাতে ঘুমনোর আগ পর্যন্ত । শ্রুতি অ মিসুক একই ইস্কুলে ভর্তি হয় তাদের পরীক্ষার ফলাফলে কেউ প্রথম কেউ দ্বিতীয় হয় । শ্রুতিদের বাসার সামনে একটু ছোট জায়গা আসে যেখানে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে । ফেব্রুয়ারি মাসে এ গাছটা ফুলে ফুলে ভরে উঠে দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগে । শ্রুতির মা মুরগী পালে বাড়ীর খালি জায়গায় । শ্রুতির প্রতিদিনের অভ্যাস সকালে উঠেই মুরগী দিম পেরেছে কি না । মিসুক আসার পর মিশুকও ওর সাথে প্রতিযোগিতা করে সকালে উঠে দিম খোঁজার জন্য । একদিন মিসুক মুরগী ডিম পেরেছে কি না দেখতে গিয়ে পচা দুটো ডিম রেখে আসে । শ্রুতি যথারীতি ডিম নিয়ে এসে ডিম ভাজার জন্য ফাটিয়েছে তখনি ডিমের পচা গন্ধে ঘর আল হয়ে গেছে । শ্রুতি তখনি উপর তলায় গিয়ে মিসুকের পিথে ৮-১০ টা কিল বসিয়ে ফিরে আসে । ওদের এসব কাণ্ড দেখে মা বাবা মামা মামি সবাই হাসা হাসি করে । একদিন কি মনে করে যেন মিসুক নিচতলায় এসেছে ঠিক তখনি শ্রুতি গোসল করে নগ্ন অবস্থায় বাইরে এসেছে । মিশুককে দেখে শ্রুতি জোরে একটা চিৎকার দিয়ে ঘরে চলে গেছে আর মিশুকও লজ্জায় উপর তলায় চলে গেছে । এরপর প্রায় সপ্তা খানেক শ্রুতি অ মিসুকের কথা বলা বন্ধ এমনকি সামনাসামনি পরলেও লজ্জায় লাল হয়ে যায় দুজনি ।
শ্রুতি ও মিসুক দুজনি এস এস ছি পরীক্ষায় এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে । এস এস ছি পরীক্ষা পর্যন্ত তারা একই ইস্কুলে পড়েছে । এখন তাদের ভিন্ন কলেজে ভর্তি হয়েছে । মিসুক নটরডেম কলেজে আর শ্রুতি আইডিয়াল কলেজে । বাসার সবাই মিলে মাঝে মাঝে আড্ডা দেয় বাসার ছাদে । দুজনের এস এস ছি পরীক্ষার পর যে অবসর সময় ছিল বাসার প্রতিদিন না হলেও শ্রুতি অ মিসুক নিয়মিত আড্ডা দিত । এই সময়ে তাদের ভিতরকার যে বন্ধুত্ব সেটা ভালবাসার দিকে আগায় যদিও কেউ কাও কে কখনও বলেনি মুখে । শ্রুতির স্বভাবে যেমন পরিবর্তন এসেছে, পরিবর্তন এসেছে তার দেহে । মিশুকেরও তাই । শ্রুতি এখন দেখতে অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে তার চুল হয়েছে কোমর পর্যন্ত, চিকন তার শরীরের গড়ন, মুখের দিকে তাকালে চোখ ফেরানো যায় না । মিসুক আর আগের মত লিকলিকে দেহী নয়, তার সাস্থের উন্নতি হয়েছে ,আরও বেশি বুদ্ধিমান হয়েছে । তারা মাঝে মাঝে দুজনে একসাথে তারা দেখে তখন দুজন কাছে আসতে চায় কিন্তু পারে না ।
মিসুক ঘুমিয়ে আছে দোতলায় তার নিজের ঘরে । হঠাৎ শ্রুতি আসলো তার ঘরে , শ্রুতির একা ঘুম আসছিলো না । শ্রুতি মিসুকের পাসে শুয়ে পড়ল । মিসুক শ্রুতিকে জ্বরিয়ে ধরল , শ্রুতি কোন শব্দ করল না নিঃশব্দে মিশে গেল মিসুকের বুকের সাথে । তারপর দুজন দুজনকে সমর্পণ করলো একে অন্যকে । তারা যেন এখন এক আত্মা, এক দেহ । হঠাৎ চোখ মেলল সে ভাবল সে স্বপ্ন দেখেছে । মিসুক পাসে ফিরে তাকাল দেখল শ্রুতি তার পাসে শুয়ে আছে । মিসুক নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না এটা স্বপ্ন না সত্যি । সে নিজের গায়ে চিমটি কাটল সে বাথ্যাও পেল মানে স সত্যি । এরপর সে শ্রুতিকে ডাকল শ্রুতি ঘুম থেকে জেগে সেও অবাক হল । কিন্তু কিছু না বলে কাপড় ঠিক করে নিচে চলে গেল । এ ঘটনার পর শ্রুতি ও মিসুকের মধ্যেকার সম্পর্ক আরও বেশি গভীর হল।
মিশুককে ছাদে নিয়ে এসেছে শ্রুতি এক্তা কথা বলার জন্য । কথাটা শ্রুতি বলতে গিয়ে কেন যেন বলতে পারছিলো না । অবশেষে বলল," সে সন্তান সম্ভাবা ।" কথাটা শোনার পর মিসুকের মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । মুহূর্তের মধ্যে তার মাথা খালি হয়ে গেল । সে দপাস করে ছাদের উপর বসে পড়ল । মিসুক ও শ্রুতি দুজনেই কেবল কলেজে উঠেছে ,এ সময় তার সন্তান শ্রুতির পেটে । এখন সে কি করবে ,সে তো মা বাবা ত দুরের কথা কাও কে বলতে পর্যন্ত পারবে না । মুসুক শ্রুতির দিকে তাকাল তার মুখটা কাল চোখের নিচে কালি পরে গেছে মনে হয় কয়েক দিন ঘুম হয় না শ্রুতির । মিসুক এখন কি করবে সে কি গোপনে শ্রুতিকে বিয়ে করবে আর যদি বিয়েও করে তাহলেও ত সমাধান হচ্ছেনা কারন সে এখন বাবা হতে পারবে না পারবে না শ্রুতি মা হতে করন তার কোন আয় রোজগার নাই ।সে বিয়ে করলে খাওয়াবে কি ? মিসুক ও শ্রুতির বাবা মার কেউ মেনে নিবে না । মিসুক আবার তাকায় শ্রুতির পেটের দিকে সে বুঝতে চায় শ্রুতি যে সন্তান সম্ভাবা সেটা বুঝা যায় না কিন্তু কয়েক দিন পরি তো বঝা যাবে । পাড়ার লোকে শ্রুতিকে নানা কথা বলবে এসব সহ্য করতে না পেরে হয়তো শ্রুতি গলায় দড়ি দিবে না হয় বিষ খাবে । না সে আর চিন্তা করতে পারছে না । মিসুক শ্রুতিকে চিন্তা করতে বাড়ন করে নিচে যেতে বলে । শ্রুতি চলে যায় কিন্তু হাজার মণের বোঝা যেন চাপিয়ে দিয়ে যায় ।
মিসুক ১০ হাজার টাকা যোগাড় করেছে । শ্রুতির পেটে তার অনাগত সন্তানের মৃত্যু নিস্তিত করতে । শ্রুতি ও মিসুক রিক্ত হস্তে বাড়ী ফিরল । মিসুক সেদিন সারা রাত কেঁদেছকে , কেঁদেছে শ্রুতিও । চোখের পাতা এক করতে পারেনি দুজনের কেউই ।
শ্রুতির জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসছে । মিসুক প্রতিদিনি তাই দেখছে তার কিছু করার নেই । মিসুক ও শ্রুতি আগের মত ছাদে আড্ডা দেয় না কথা বলে খুব কম। তারা যেন দিন দিন দূরে সরে যাচ্ছে । সেই দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিল শ্রুতির বিয়ে হয়ে । শ্রুতি তার বিয়েতে অমত করে নি কারন তার সাথে মিসুকের বিয়ে কোন ভাবেই সম্ভব নয় । সে এও জানে মিসুক ছাড়া অন্য কওকে সে পরিপূর্ণ ভাবে ভালবাসতে পারবে না । বিয়ের কয়েক দিন আগে থেকে মিসুকের সাথে শ্রুতির কথাত দুরের কথা দেখা পর্যন্ত হয় নি । বিয়ের আগের দিন রাতে শ্রুতি ছাদে যায় সেখানেই দেখা হয় মিসুকের সাথে। সে মিসুকের কাঁধে, মিসুক ফিরে তাকায় । মিসুকের চোখ ফোলা এখন চোখের কোনায় জল আছে । শ্রুতি মিশুককে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে , কাঁদে মিশুকও । অনেক্ষন পর কান্না থামে শ্রুতি মিসুকের ঠোঁটে একটা চুম্বন একে চলে যায় ।
শ্রুতির সাথে বছর দশেকের উপর দেখা নেই । মিসুক চায় না শ্রুতির সাথে দেখা হোক । মিসুক শুনেছে শ্রুতির স্বামী খুব ভাল মানুষ যদিও শ্রুতির কোন সন্তান হয়নি তবুও স্বামী তাকে ত্যাগ করে নি বরং শ্রুতিকে এ কথা কখনও মনে করতে দেয় না । শ্রুতির স্বামী তাকে অনেক বার যেতে বলেছে বাড়ীতে কিন্তু সে কখনও জায় নি । মিসুক এখন প্রথম স্রেনির সরকারি কর্মকর্তা । তার বিয়ের বয়েস পার হয়ে গেছে অনেক আগেই মা বাবা বিয়ের কথা বলতে বলতে অবশেষে কিছু করতে না পেরে তারা চলে গেছে গ্রামের বাড়ীতে । মিসুকের অফিস বাদে অন্য সময় সে কমলাপুরের পথ শিশুদের শিক্ষা দান করে । সে তার বেতনের টাকা দিয়ে কাপড় চোপর কিনে দেয় তাদের । এদের মধ্যে একটা মেয়েকে তার খুব ভাল লাগে যার বয়স ৯ বছর । সে এই মেয়েকে দেখে আর ভাবে তার সন্তানটি হয়ত এর চেয়ে বড় হত । মিসুক এসব পথ শিশুদের মাঝে খুঁজে পায় তার সন্তানের ছায়া ।
উৎসর্গ ঃ
আমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সবচেয়ে প্রিয় শিক্ষিকা সপ্না ।